৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

৭ বছরে সর্বনিম্ন রিজার্ভ

আপডেট: মে ৮, ২০২৩

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ডলার সংকটে পড়ে দেশ। এসময়ে ডলার সাশ্রয়ের নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবুও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। বরং আমদানি বিল পরিশোধে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে আসে। ডলারের দাম নির্ধারণে দায়িত্ব দেওয়া হয় এবিবি ও বাফেদাকে। তবে সংকট কমার পরিবর্তে গত বছরের মার্চ থেকে সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এতে ডলারের মজুতও কমতে থাকে।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধে বড় চাপে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মজুতে। আকুর দায় বাবাদ ১১৮ কোটি ডলার (১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধের পরে বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার। এটি গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ম। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী গণনা করায় রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ৫ দশমিক ৫ বিলিযন ডলার বাদ দিলে দেশের ব্যবহারযোগ্য মোট রিজার্ভের হবে ২৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আকুর দায় ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন পরিশোধের পরে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন। এর আগে গত ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর নেমেছিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে ২০১৬ সালের শেষের দিকে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। আর ২০১৭ সালের জুনে রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। করোনাকালীন সময়ে দেশেট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরের মধ্যে ছিল। তবে ২০২১ আগস্ট মাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়েছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারে স্বস্তি ফেরাতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবুও সংকট কাটছে না। ডলার বিক্রয়সহ অন্য খাতে ব্যয় কমাতে না পারলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়বেই। এসব কারণে সংকট কাটছে না অর্থনীতিতে।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্য ভুক্ত দেশের মধ্যে রয়েছে- ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। শ্রীলংকার অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় তারা আকু থেকে বেরিয়ে গেছে। সদস্য দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আকুল আমদানি বিল পরিশোধ করে থাকে।

এতোদিন প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) ডলারের দাম ছিল ১০৭ টাকা আর রপ্তানি আয়ে ছিল ১০৫ টাকা। এখন থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে আবারও ডলারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)।

গত রোববার (৩০ এপ্রিল) এবিবি ও বাফেদার এক ভার্চ্যুয়াল সভায় ডলারের দাম আরেক দফা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতি ডলারে দাম পাবেন ১০৮ টাকা যেটা আগপ ছিল ১০৭ টাকা। একইভাবে রপ্তানিকারকেরা রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম পাবেন ১০৬ টাকা যেটা এর আগে ১০৫ টাকা ছিল। নতুন এ সিদ্ধান্ত সোমবার (১ মে) থেকেই কার্যকর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম।

  • ফেইসবুক শেয়ার করুন
Website Design and Developed By Engineer BD Network