আপডেট: ডিসেম্বর ২০, ২০২৩
বাংলাদেশের সামনে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচ। যে কারণে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি জেতার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারের ১৬৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের উপর ভর করে চ্যালেঞ্জিং স্কোরও গড়েছিল টাইগাররা। তবে শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডকে আটকাতে পারেনি বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২২ বল হাতে রেখে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ৭ উইকেটে।
আজ বুধবার নেলসনের সাক্সটন ওভালে বাংলাদেশের দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুদান্ত শুরু করে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার উইল ইয়াং ও রাচিন রাবিন্দ্রা। উদ্বোধনী জুটিতে ৭৬ রান করে তারা। ফিফটির (৩৩ বলে ৪৫) কাছাকাছি গিয়ে হাসান মাহমুদের বলে রিসাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান রাবিন্দ্রা। তবে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান ইয়ং। কিন্তু হাসান মাহমুদ তাকে সেঞ্চুরি করতে দেননি। ৮৯ রানের মাথায় (৯৪ বলে) ইয়াংকে বোল্ড করে দেন এই ডানহাতি পেসার।
তিন নম্বরে নেমে আরও একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন হেনরি নিকোলস। ফিফটি হাঁকানোর পর সেঞ্চুরির একেবারে কাছাকাছি গিয়ে ফেরেন তিনি। ৯৫ রানের মাথায় (৯৯ বলে) শরিফুল ইসলামের শিকার হন এই কিউই ব্যাটার।
এরপর অথিনায়ক টম ল্যাথাম ৩২ বলে ৩৪ আর টম ব্লান্ডেল ২০ বলে ২৪ রান নিয়ে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছাড়েন। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতেছে নিউজিল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। এনামুল হক বিজয় আর সৌম্য সরকারের উদ্বোধনী জুটিটা ভাঙে পঞ্চম ওভারে দলীয় ১১ রানেই। অ্যাডাম মিলনের বেরিয়ে যাওয়া বল ডিফেন্ড করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিজয়। ১২ বল খেলে তিনি করেন মাত্র ২ রান।
সঙ্গী হারালেও সৌম্যকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল, উইল ও’রউরকের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান এ বাঁহাতি। কিন্তু পরের ওভারেই ফের ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এবার সৌম্যকে রেখে ফেরেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
বরাবরের মতো দৃষ্টিকটু আউট শান্ত। জ্যাকব ডাফির বলটি আলগাভাবে ফ্লিক করতে গেলে ব্যাটের সাইডে লেগে উঠে যায় আকাশে। সহজ ক্যাচ নেন নিকোলস। ৯ বলে বাংলাদেশ দলপতি করেন ৬ রান। দলীয় ৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর লিটন কিউই পেসার ডাফির বলে দৃষ্টিনন্দন এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পরের বলেই কভার পয়েন্টে উইকেট বিলিয়ে আসেন। ১১ বলে করেন ৬ রান। ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
সৌম্য আর তাওহিদ হৃদয়ের জুটিটা ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। ৩৬ রানে তাদের জুটি ভাঙে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। সৌম্যর শট বোলার ক্লার্কসনের হাতে লেগে ভেঙে যায় ননস্ট্রাইকের স্টাম্প। হৃদয় কিছুটা বাইরে ছিলেন। ১৬ বলে ১২ করে ফিরতে হয় তাকে।
৮০ রানে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৪ উইকেট। সেখান থেকে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে দারুণ এক জুটি সৌম্যের। ১০৭ বলে তারা যোগ করেন ৯১ রান। মুশফিককে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানিয়ে জুটিটি অবশেষে ভাঙেন ডাফি। ৫৪ বলে ৫ বাউন্ডারিতে মুশফিক করেন ৪৫।
তবে সৌম্য তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ১১৬ বলে। চার-ছক্কায় মাঠ গরম করা সৌম্যের সুযোগ ছিল দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডটি নিজের করে নেয়ার।
২০২০ সালে সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন লিটন দাস। সৌম্য মাত্র ৮ রানের জন্য তাকে পেছনে ফেলতে পারেননি। ইনিংসের পাঁচ বল বাকি থাকতে ও’ররকির বলে এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য। ১৫১ বলে গড়া সৌম্যের ১৬৯ রানের ইনিংসে ছিল ২২টি চার আর ২টি ছক্কা।
ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ও’রর্কের বলে নিকোলসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার ফেরার পর দলীয় স্কোরকার্ডে মাত্র ১ রান যোগ করতে পেরেছেন পরবর্তী দুই ব্যাটার। বিলিয়ে দিয়েছেন আর দুটি উইকেট। অর্থাৎ শেষ ওভারে বাংলাদেশ হারায় তিন উইকেট। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতেই ২৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের ও’ররকি আর জ্যাকব ডাফি নেন তিনটি করে উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ।